কৃষি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উচ্চশিক্ষায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বিদ্যাপীঠ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় প্রশাসনের সামনে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম হেমায়েত জাহান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আবদুল লতিফ এবং রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন ।
দিনব্যাপী আয়োজনের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ার সেন্টার ও টিএসসির সামনে বৃক্ষ রোপন ও রক্তদান কর্মসূচী পালন করা হয়। বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, হাঁড়িভাঙা, হাঁস-মুরগি দৌড় ও রশি টানাটানির মতো মজার খেলার আয়োজন করা হয়। বিকেল ৩টায় টিএসসির কনফারেন্স হলে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক উপস্থাপনা অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার সমাপনী হিসেবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বলেন, ‘পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে যে গবেষণাগুলো হবে তা দেশের উন্নয়নে এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভূমিকা রাখবে বলে আশা রাখি। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থী এমনভাবে দক্ষ হয়ে উঠবে, তারা তাদের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে সক্ষম হবে। মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে জোর দিচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার উৎকর্ষই আমাদের মূল লক্ষ্য। সমাজ ও জাতির টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে এবং এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠুক এবং তারা দেশ ও বিশ্ব গড়ার কাজে নিয়োজিত হোক।’
শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার দ্বার খুলে ১৯৭২ সালে প্রথমে প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘জনতা কলেজ’ নামে একটি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ। কলেজটির যাত্রা শুরু হয় গোল পাতার ছাউনি দেওয়া একটি ঘর থেকে। সাবেক কেবিনেট সচিব ও মন্ত্রী এম. কেরামত আলীর উদ্যোগে ১৯৭৯ সালে জনতা কলেজটি ‘পটুয়াখালী কৃষি কলেজ’ নামে একটি স্নাতক ডিগ্রিধারী কলেজে রূপান্তরিত হয়। পরে কলেজটি ১৯৭৯-৮০ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের অধিভুক্ত হয়ে বেসরকারি কৃষি কলেজ হিসেবে স্নাতক পর্যায়ে কার্যক্রম শুরু করে এবং ১৯৮৪ সালে তৎকালীন সরকার কৃষি কলেজটিকে জাতীয়করণ করে। ১৯৯৭ সালের ১৫ মার্চ তৎকালীন সরকার পটুয়াখালী কৃষি কলেজকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীতকরণের ঘোষণা দেয়।
পরে ২০০১ সালের ১২ জুলাই জাতীয় সংসদে পবিপ্রবি আইন পাস হয় এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০২ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন কেবিনেট সচিব ও মন্ত্রী এম কেরামত আলী এবং সাবেক বাণিজ্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকার সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন জারি করে উক্ত আইন কার্যকরের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।