পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) নানা আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও দুমকি উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে টিএসসি সম্মুখে এসে শেষ হয়।
এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় টিএসসি কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্থানীয় তিন শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। শহীদ জসীমের পিতা সোবহান হাওলাদার এবং শহীদ মো. মিলনের পিতা হোসেন আলী আবেগভরে বক্তব্য প্রদানকালে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এছাড়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সাহসী ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে পবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতিকে সম্মাননা স্মারক (ক্রেস্ট) প্রদান করা হয়।
প্রফেসর ড. মহসীন হোসেন খানের সভাপতিত্বে এবং প্রফেসর ড. মো. মাসুদুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান এবং ট্রেজারার প্রফেসর মো. আব্দুল লতিফ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যে সংগ্রাম গড়ে তোলে, তা স্বৈরশাসনকে প্রতিহত করে গণতন্ত্রের নবসূচনা ঘটায়।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে জুলাই গণঅভ্যুত্থান একটি অনন্য মাইলফলক। এটি কেবল একটি রাজনৈতিক আন্দোলনই নয়, এটি ছিল ফ্যাসিবাদ, বৈষম্য ও বাকস্বাধীনতা হরণের বিরুদ্ধে সাধারণ ছাত্র-জনতার সাহসী প্রতিবাদ। এই আত্মত্যাগ জাতি কোনোদিন ভুলবে না।” তিনি আরও বলেন, “আমরা পবিপ্রবিকে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত একটি আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বদ্ধপরিকর।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিন, বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও বিভাগীয় প্রধানরা, যেমন ডিন প্রফেসর মোহাম্মদ জামাল হোসেন, বেসিক সায়েন্স বিভাগের প্রফেসর ড. মামুন অর রশীদ, কৃষি সম্প্রসারণ ও গ্রামীণ উন্নয়ন বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মামুন-অর-রশিদ, সিএসই অনুষদের প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মাসুদ, জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর মো. মাহফুজুর রহমান সবুজ, ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. আবুবকর সিদ্দিক প্রমুখ।
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন পবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মারসিফুল আলম রিমন, জান্নাতীন নাঈম জীবন, তানভীর আহমেদ খান, খালিদ হাসান মিলু, মো. ফরিদউদ্দিন এবং কর্মচারী প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে মো. মোশারেফ হোসেন ও মো. মাহবুবুর রহমান।